Header Ads

What is a laptop computer ?

ল্যাপটপ কম্পিউটার কি?
What is a laptop computer?

একটি ল্যাপটপ বা একটি নোটবুক হল বহনযোগ্য ব্যক্তিগত কম্পিউটার যা দেখতে ঝিনুক আকৃতির এবং ভ্রমন উপযোগি। ল্যাপটপ এবং নোটবুক উভয়কে পূর্বে ভিন্ন ধরা হত কিন্তু বর্তমানে তা মানা হয় না। ল্যাপটপ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয় যেমন কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষায় এবং ব্যক্তিগত বিনোদনের কাজে।
একটি ল্যাপটপ কম্পিউটারে ডেস্কটপ কম্পিউটারের সমস্ত উপাদান এবং সকল ইনপুটগুলোকে একত্রিত করা হয়। যেখানে শুধুমাত্র একটি যন্ত্রে প্রদর্শনী, স্পিকার, কিবোর্ড এবং টাচপ্যাড বা ট্র্যাকপ্যাড থাকে। বর্তমানের বেশিরভাগ ল্যাপটপের সঙ্গেই থাকে ওয়েবক্যাম এবং মাইক্রোফোন। একটি ল্যাপটপ চালানো যায় ব্যাটারি এবং এসি এডাপ্টারের মাধ্যমে বিদ্যুতের সরাসরি সংযোগে। ল্যাপটপের মডেল, প্রকারভেদ ও উৎপাদনের উপর হার্ডওয়্যারের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।
বহনযোগ্য কম্পিউটারগুলোকে পূর্বে ছোট একক বাজার হিসেবে গন্য করা হত এবং এগুলো বিশেষ ধরনের প্রায়োগিগ কাজে ব্যবহার করা হত যেমন সৈনিকদের কাজে, হিসাববিজ্ঞানেরর কাজে, বিক্রয় প্রতিনিধিদের প্রয়োজনে ইত্যাদি। এগুলো পরে আধুনিক ল্যাপটপে পরিণত হয়। এগুলো আকারে আরো ছোট, পাতলা, সস্তা, হালকা এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হতে থাকে ফলে বহুমুখী কাজে এদের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়।
সংজ্ঞায় ভিন্নতা!!!
যন্ত্রটিকে ল্যাপটপ নামে ডাকার ব্যাপারটি শুরু হয় আশির দশকে। তখন সাধারণ কম্পিউটার থেকে ভ্রাম্যমান কম্পিউটারগুলোকে আলাদা করার জন্য এই নামে ডাকা হত। এসব যন্ত্রাংশ আগের বহনযোগ্য কম্পিউটারের তুলনায় ভারি এবং এগুলো কারো কোলে বা হাটুর উপর রেখে ব্যবহার করা যেত না। কয়েক বছর পরে প্রস্তুতকারকরা আরো ছোট আকারের বহনযোগ্য যন্ত্রাংশ উৎপাদন শুরু করে যাদের ওজন ও আকার ছিল কম। এগুলোতে প্রদর্শনী ছিল এ৪ আকারের কাগজের সমান এবং এদেরকে ডাকা হত নোটবুক নামে। কারন এগুলো তখনকার সময়ের মোটা ও ভারি ল্যাপটপের থেকে আকারে ও ওজনে ছোট ছিল।
এখন, বিশ্বের প্রায় সবজায়গায় ল্যাপটপ কথাটি বেশি ব্যবহৃত হয় এবং কিছু কিছু জায়গায় নোটবুক কথাটি এখনও চলে যেমন রাশিয়ায়। নোটবুক কথাটি ব্যবহার করা হয় বহযোগ্য যন্ত্রাংশ বুঝাতে। ডাকনামের এই ভিন্নতা সময়ের সাথে সাথে মিলিয়ে গেছে উদাহরনসরূপ, এলিয়েনওয়্যারের গেমিং যন্ত্র "এলিয়েনওয়্যার ১৮ গেমিং ল্যাপটপ" যাতে ১৮" প্রদর্শনী এবং যার ওজন ৬ কিলোগ্রামের মত, একে ল্যাপটপ এবং নোট দুটো নামেই বিবেচনা করা হয়। যদিও এটি কোলে রেখে কাজ করার উপযোগি নয় এবং নোটবুকটি ছবি আঁকার প্যাডের মত ছোটও নয়।
ল্যাপটপের ইতিহাস!!!!
১৯৭১ সালে ব্যক্তিগত কম্পিউটারের সম্ভাবনার সাথে সাথে বহনযোগ্য ব্যক্তিগত কম্পউটারের চাহিদার সম্ভাবনাও তৈরি হয়। এলান কে ১৯৬৮ সালে জেরক্স পার্কে একটি "ব্যক্তিগত, বহনযোগ্য নিজের কাজে তথ্য ব্যবহার করা যায়" এমন যন্ত্র হিসেবে কল্পনা করেন এবং তার গবেষনাপত্র "ডায়নাবুকে" ১৯৭২ সালে বর্ণনা করেন।
আইবিএমের বিশেষ এপিএল মেশিন পোর্টেবল (এসসিএএমপি) কম্পিউটারটি দেখানো হয় ১৯৭৩ সালে। এই পরীক্ষামূলক যন্ত্রটি আইবিএমের পালম প্রসেসরের উপর ভিত্তি করে নির্মিত
আইবিএম ৫১০০, প্রথম বানিজ্যিক বহনযোগ্য কম্পিউটার। এটি বাজারে আসে ১৯৭৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। এর ভিত্তি ছিল এসসিএএমপি পরিক্ষামূলক যন্ত্রটি।
৮ বিটের সিপিইউ ব্যবহৃত হওয়া শুরু করলে, বহনযোগ্য কম্পিউটারের সংখ্যা বাড়তে থাকে। অসবর্ন ১, ছাড়া হয় ১৯৮১ সালে, এতে ব্যবহার করা হয় জিলোগ জেড৮০ আর ওজন ছিল ২৩.৬ পাউন্ড (দশ কেজির মত)। কোন ব্যাটারি ছিল না, একটি ৫ ইঞ্চি (১৩ সে.মি.) সিআরটি প্রদর্শনী এবং ৫.২৫ ইঞ্চি (১৩.৩ সে.মি) দ্বৈত একক ঘনত্বের ফ্লপি ড্রাইভ ছিল। একই বছরে প্রথম ল্যাপটপের আকারের বহনযোগ্য কম্পিউটারের ঘোষণা আসে, এটি ছিল এপসন এইচএক্স-২০। এর মধ্যে এলসিডি প্রদর্শনী, পুনরায় চার্জ দেয়া যায় এমন ব্যাটারি, ক্যালকুলেটর আকারের প্রিন্ট্রার চেসিস ছিল। ট্যান্ডি/রেডিওশেক এবং এইচপি উভয়েই বিভিন্ন নকশার বহনযোগ্য কম্পিউটার উৎপাদন করে।
১৯৮০ দশকের শুরুর দিকে প্রথম ভাঁজ করা যায় এমন ল্যাপটপ দেখা যায়। অস্ট্রেলিয়ায় ডুলমন্ট ম্যাগনাম ছাড়া হয় ১৯৮১-৮২ সালের দিকে, কিন্তু ১৯৮৪-৮৫ সালের পূর্বে বিশ্বব্যাপি এটি বাজারজাতকরন করা হয়নি। ১৯৯২ সালে জিআরআইডি বা গ্রিড কমপ্যাস ১১০০ ছাড়া হয়। এটি নাসা ও সৈনিকদের কাজে ব্যবহৃত হত। গ্যাভিলান এসসি, ১৯৮৩ সালে বাজারের আসে, যা প্রস্তুতকারক ল্যাপটপের মধ্যে প্রথম হিসেবে অভিহিত করে। ১৯৮৩ সালের পর নতুন ইনপুট ব্যবস্থা আবিষ্কৃত হয়, যার মধ্যে ল্যাপটপেরও ইনপুট যন্ত্রাংশ ছিল, যেমন টাচপ্যাড (গ্যাভিলান এসসি), নির্দেশক কাঠি (আইবিএম থিঙ্কপ্যাড ৭০০, ১৯৯২) এবং হাতের লেখা সনাক্তকরন (লিনাস রাইট-টপ, ১৯৮৭)। এসময় কিছু সিপিইউ এমনভাবে বানানো হয় যাতে এগুলো কম বিদ্যুত শক্তি ব্যবহার করে, ফলে ব্যাটারির স্থায়িত্ব বেড়ে যায়। এবং কিছু ল্যাপটপের প্রস্তুত নকশায় কাজে সহায়তা করার জন্য কিছু সক্রিয় শক্তি ব্যবস্থাপনার বৈশিষ্ট্যও ছিল যেমন ইন্টেল স্পিডস্টেপ এবং এএমডি'র পাওয়ারনাও ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য।
১৯৮৮ সাল নাগাদ প্রদর্শনী ভিজিএ রেজুলেশনে পৌছায়। উদাহরনসরূপ উল্লেখ্য করা যায় কমপেক এসএলটি/২৮৬। এবং রঙিন প্রদশর্নীগুলোর প্রচলন শুরু হয় ১৯৯১ সালের দিকে, ২০০৩ সালে ১৭" প্রদশর্নী আসার আগে পর্যন্ত, রেজুলেশনে এবং প্রদশর্নীর আকারে ব্যাপক পরিবর্তন হতে থাকে। এসময় হার্ডড্রাইভের (১৯৮০ সালের শেষের দিকে প্রস্তুতকৃত ৩.৫" মাপের ড্রাইভের ধারাবাহিকতায়) ব্যবহার শুরু হয়। এক সময় ২.৫" ড্রাইভ ল্যাপটপে সাধারনভাবে ব্যবহৃত হতে থাকে। ২০০০ দশকের শুরু থেকেই অপটিক্যাল ড্রাইভগুলোর ব্যবহার হতে থাকে যেমন সিডি রম, রাইটেবল সিডি রম, পরে ডিভিডি রম, রাইটেবল ডিভিডি রম, তারপরে ব্লু-রে ড্রাইভ।
প্রকারভেদ!!!!
১৯৭০ দশকের শেষের দিকে, বহনযোগ্য কম্পিউটারের সূচনার শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত এর আকৃতিগত পরিবর্তন বাস্তবিকই অসাধারনভাবে হয়েছে। এর মধ্যেই এর বিভিন্ন ভিন্নতা এসেছে দৃশ্যত এবং আবশ্যিকভাবে প্রযুক্তিগত দিক থেকেও।
সনাতন ল্যাপটপ!!
এ্যপল ম্যাকবুক প্রো, একটি সনাতন আকৃতির ল্যাপটপ
ঝিনুকের আকৃতির ল্যাপটপগুলোকে সনাতন ধারার ল্যাপটপ বলে অভিহিত করা হয়। এগুলোর এক পিঠে প্রদশর্নী ও অন্য প্রান্তে কিবোর্ড থাকে। এটিকে সহজেই ভাঁজ করা যায়, যাতে ভ্রমনে অসুবিধা না হয়। প্রদর্শনী এবং কিবোর্ড দুটোই ব্যবহার করা যায় না যখন ভাঁজ করা থাকে। এই আকৃতির ও বৈশিষ্ট্য বিশিষ্ট যন্ত্রাংশগুলোকে সনাতন ধারার ল্যাপটপ বা নোটবুক বলে ডাকা হয়। বিশেষ করে এদের যদি প্রদর্শনী ১৩ থেকে ১৭ ইঞ্চি ব্যাসের হয় এবং একটি পূনার্ঙ্গ অপারেটিং সিস্টেম যদি চালাতে সক্ষম হয়। সনাতন ল্যাপটপগুলো হল সবচেয়ে সাধারন আকৃতির ল্যাপটপ। যদিও ক্রোমবুক, রূপান্তরযোগ্য ল্যাটপট, আল্ট্রাবুক এবং ল্যাপলেটগুলো দিনকে দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এগুলোও একই কার্যকারিতা প্রদান করে।
সাবনোটবুক!!!
সনি ভায়ো পি ধারার সাবনোটবুক
একটি সাবনোটবুক অথবা একটি আল্ট্রাবহনযোগ্য (ল্যাপটপ) একধরনের ল্যাপটপ যার নকশা এবং বাজারজাতকরন করা হয়েছে বহনযোগ্যতার কথা মাথায় রেখে। এগুলো আকারে ছোট, কম ওজনের এবং প্রায়শই অতিমাত্রায় ব্যাটারির ধারনক্ষমতা সম্পন্ন হয়। এগুলো সাধারনত ছোট আকৃতির ও হালকা হয় সাধারন মানের ল্যাপটপের তুলনায়। ওজন হতে পারে ০.৮-২ কেজি (২-৫ পাউন্ড) এবং ব্যাটারির ধারণ ক্ষমতা হতে পারে ১০ ঘন্টার বেশি। নেটবুক এবং আল্ট্রাবুকের সূচনার পর থেকে, সাবনোটবুকের এবং উভয় শ্রেনীর মধ্যকার সম্পর্ক অস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নেটবুক হল যে বৈশিষ্টগুলো না থাকলেই নয় এমন সব বৈশিষ্ট্য নিয়ে তৈরি আর এটি হল সাবনোটবুকের একটি উপশ্রেনী। কিছু আল্ট্রাবুকের প্রদর্শনী এত বড় যে তা সাবনোটবুক বলা যায়, বিশেষ কিছু আল্ট্রাবুক আবার সাবনোটবুকের শ্রেনীতেও খাপ খায়। একটি উল্লেখ্যযোগ্য সাবনোটবুকের উদাহরন হল এ্যপল ম্যাকবুক এয়ার।
নেটবুক!!!
নেটবুক ল্যাপটপের একটি অন্য রূপ যাকে দামে সস্তা, ওজনে হালকা, কম শক্তি ব্যয় করার পাশাপাশি তারবিহিন যোগাযোগ ও ইন্টারনেট সংযোগের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ২০০৮ সালের দিকে বাজারে নেটবুক বান্যিজিকভাবে আসে। যার বৈশিষ্ট্য ছিল হালকা ১ কেজিরও কম, প্রদশর্নী ৯ ইঞ্চির থেকে ছোট এবং দামে ৪০০ ডলারের কম। নেটবুক নামটি নেয়া হয় ইন্টারনেট/নেটওয়ার্ক থেকে যাকে সংক্ষেপে নেট ডাকা হয়। এই সংজ্ঞাটি ব্যবহার করা হয় যন্ত্রাংশের ওয়েব ভিত্তিক কম্পিউটিং কার্যকারিতার উপর ভিত্তি করে। নেটবুকগুলো লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম সহযোগে ছাড়া হত যদিও পরের গুলোতে উইন্ডোজ এক্সপি, উইন্ডোজ ৭ প্রভৃতি ব্যবহৃত হয়। সব প্রধান নেটবুক উৎপাদকই ২০১২ সালের শেষ নাগাদ উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।
ভাল লগলে সেয়ার ও কমেন্ট করুন...
লেপটপ নিয়ে লিখা চলমান থাকবে........

No comments

Powered by Blogger.